Loading...
Travel Budget

বাজেট ট্রাভেলিং - বিদেশ ভ্রমনে খরচ কমানোর উপায়

বিদেশ ভ্রমনের কথা চিন্তা করলেই মাথায় যে জিনিসটি সবার আগে কাজ করে তা হলো খরচ! হ্যা, এটা সত্যি যে দেশের বাইরে ভ্রমনে গেলে বেশ ভালো টাকা খরচ হয়। তবে একটু সতর্ক হলেই কিন্ত এই অতিরিক্ত খরচ কমানো সম্ভব। আমাদের আজকের ব্লগের বিষয়বস্তু “বাজেট ট্রাভেলিং” এখানে আমরা জানবো “বিদেশ ভ্রমনে অতিরিক্ত খরচ কমানোর ৯টি উপায়” সম্পর্কে। চলুন শুরু করা যাক।

বিদেশ ভ্রমনে অতিরিক্ত খরচ কমানোর ৯টি উপায়

০১. সঠিক পরিকল্পনা

একটি সঠিক পরিকল্পনা আপনার ভ্রমন ব্যায় নি:সন্দেহে আনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারে। কোথায় যাচ্ছেন যাওয়ার আগে সেই যায়গা সম্পর্কে সঠিক ধারনা নিন। এখন ইন্টারনেটের যুগ তাই আপনার ট্রাভেল ডেস্টিনেশন সম্পর্কে অনেক তথ্য অনলাইনেই পাবেন। এরপর পুরো ভ্রমনের একটা প্লান করে সেই অনুযায়ী ভ্রমন প্লান করুন। কোথায় কতদিন থাকবেন এ ব্যাপারে আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন, তাহলে পুরো ট্যুরের খরচের হিসেব টা আগেই ধারনায় রাখতে পারবেন।

০২. সঠিক সময়ে বুকিং

সঠিক সময়ে হোটেল এবং ফ্লাইট বুকিং করলে বুকিং খরচ অনেকটাই কমানো সম্ভব। এখানে সঠিক সময় বলতে বোঝানো হয়েছে অগ্রিম টিকেট কাটাকে। আপনি যদি ভ্রমনের আগ মুহূর্তে হোটেল কিংবা প্লেনের টিকেট বুকিং করেন তার থেকে ভ্রমনের ২-৩ সপ্তাহ আগে বুকিং করলে আরো কম খরচে বুকিং করতে পারবেন।

০৩. মূল্য যাচাই

হোটেল গুলোতে বুকিং এর আগে তাদের অফার গুলো সম্পর্কে জেনে নিন। বিভিন্ন ধরনের ট্রাভেল ওয়েবসাইট থেকে হোটেলের রুম ট্যারিফ জেনে নিন এরপর যেখানে সবথেকে কমে পাবেন সেখান থেকেই বুকিং করুন। হোটেল বুকিং করার আগেই বুকিং এর সাথে তারা এডিশনাল কি কি সার্ভিস প্রদান করবে এসম্পর্কে তাদের সাথে কথা বলে আগেই নিশ্চিত হয়ে নিন। তাহলে পরবর্তীতে ঝামেলা হওয়ার সম্ভবনা কম থাকবে।

০৪. অফ সিজন

বিদেশ ভ্রমন খরচ কমানোর একটি চমৎকার উপায় হচ্ছে অফ সিজনে ভ্রমন করা। পিক সিজনের থেকে অফ সিজনে হোটেলগুলোতে কোনো কোনো সময় ৫০%-৬০% পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়। ধরা যাক আপনি ইউরোপ ভ্রমন করতে চাচ্ছেন কিন্ত ইউরোপ ভ্রমনের পিক টাইম হচ্ছে গ্রীষ্মকাল অর্থাৎ জুন থেকে আগষ্ট এই সময়টা। এই সময়ে আপনি ইউরোপের কোথাও যেতে চাইলে সংগত কারনেই অফ সিজনের থেকে একটু বেশি খরচ হবে। তাই বিদেশ ভ্রমনে অতিরিক্ত খরচ কমাতে আপনি অফ সিজনে ভ্রমন করতে পারেন।

০৫. লোকাল হোটেলে থাকা

বিদেশ ভ্রমনে গেলে থাকার হোটেল টা ভালো হওয়া চাই। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। বিশেষ করে ঘোর ছেড়ে বাইরে থাকতে গেলে থাকার জন্য ভালো একটা রুম অবশ্যই চাই। কিন্ত এই ভালো হোটেলে থাকার ইচ্ছে পূরন করতে গিয়ে পুরো খরচের একটি বড় অংশ চলে যায় হোটেলে থাকার খরচেন পিছনে। এই অতিরিক্ত খরচ অনেকটাই কমানো সম্ভব যদি লোকাল কোনো সাধারন মানের হোটেলে থাকা যায়।

বর্তমান সময়ে “ব্যাকপ্যাক ট্রাভেলিং” এর ট্রেন্ড খুব জনপ্রিয় হচ্ছে। এটির মানে হলো একটি সাধারন ব্যাকপ্যাকে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে ভ্রমনে বের হওয়া। এই ব্যকপ্যাক নিয়ে ভ্রমনকারীরা সাধারনত ব্যাকপ্যাকার নামে পরিচিত। এরাও খরচ কমানোর জন্য ভ্রমনকারী দেশে লোকাল হোস্টেল কিংবা ডর্মেটরীতে রাত কাটায়।

০৬. লোকাল কেনাকাটা

বিদেশ ভ্রমনে যাবেন আর কেটাকাটা করবেন তা কি হয়? এই কেটাকাটায় ই কিন্ত অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। কেটাকাটার খরচটা চাইলেই কমানো সম্ভব লোকাল দোকান থেকে কেনাকাটা করে। কারন নামীদামী মার্কেট গুলোতে স্বাভাবিক ভাবেই সবকিছুর দাম বাড়তি রাখা হয় আর তাই খরচ কমাতে লোকাল দোকান গুলো থেকে দামাদামি করে পন্য কিনে খরচ কমানো যেতে পারে।

০৭ পাবলিক পরিবহন

দেশের বাইরে ঘুরতে গেলে সবথেকে বেশি যে খাতে খরচ হয় তা হলো ট্রান্সপোর্ট। নিজের দেশ থেকে অন্যদেশে যাওয়ার জন্য অধিকাংশ সময়ই প্লেনে ভ্রমন করতে হয়। এখানে চাইলেও খরচ খুব বেশি কমানোর সুযোগ নেই তবে যে দেশে ভ্রমন করছেন সেই ট্রাভেল ডেস্টিনেশনে কার বা ট্যাক্সি পরিহার করে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট যেমন বাস বা ট্রেন ব্যবহার করে ভ্রমন খরচ কিছু হলেও কমানো সম্ভব।

০৮. ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা

আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড হোল্ডার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি বিদেশ ভ্রমনের সময় বেশ কিছু সুনিদৃষ্ট যায়গায় বিশেষ ছাড় পাবেন। যেমন উদাহরন স্বপূর বলা যেতে পারে, এমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড হোল্ডার রা ১২ জুলাই থেকে ১২ আগষ্ট পর্যন্ত তাদের কার্ডে ১ লক্ষটাকা খরচ করলে নভো এয়ারের ৭০০০টাকা গিফট ভাউচার পাবে। শুধু এমেরিকান এক্সপ্রেস ই না, সব ব্যাংকগুলোই তাদের কার্ডের জন্য বিশেষ বিশেষ ছাড় প্রদান করে থাকে।

এছাড়াও বিশেষ কিছু কার্ড হোল্ডার রা বিশ্বের অনেক এয়ারপোর্টে লাউন্জ সুবিধা পান। বাংলাদেশ বিমান বন্দরে সিটি ব্যাংকের এমেরিকান এক্সপ্রেস এবং ইস্টার্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড হোল্ডার রা লাউন্জ সুবিধা পান।

এর বাইরেও বিদেশে কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ডগুলোর পার্টনার আউটলেটে বিশেষ ছাড় তো থাকছেই।

০৯. গ্রুপ নিয়ে ভ্রমন

বিদেশে ভ্রমন ব্যায় অনেকাংশেই কমানো সম্ভব যদি আপনি গ্রুপ নিয়ে ভ্রমন করেন। গ্রুপ নিয়ে ভ্রমন করলে যাতায়ত, হোটেল এবং খাওয়ার খরচ সবই ভাগাভাগি হয় এর ফলে জনপ্রতি হিসেবে খরচ কম হয়। এছাড়াও ব্যাক্তিগত ভাবে একা ভ্রমন করলে নিরাপত্তা জনিত সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা থাকে। যেটা গ্রুপ ট্যুরে হওয়ার সম্ভবনা কম।

আশাকরি বিদেশ ভ্রমনে অতিরিক্ত খরচ কমানোর ৯টি উপায় নিয়ে আমাদের ব্লগটি আপনাদের ভালো লেগেছে। বিদেশ ভ্রমনের ব্যাপারে যেকোনো ধরনের তথ্য বা সাহায্যের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন

 

Add your comment:

{